প্রকাশিত: Thu, Dec 8, 2022 6:54 PM
আপডেট: Tue, Jul 1, 2025 3:44 PM

যাদের ছেলে-মেয়ে প্রথম স্কুলে যাবে

মুনির হাসান: রুবাইয়েরর যখন স্কুলে যাওয়ার সময় হলো আমি খুব দ্রুত একটা স্কুল খোঁজে বের করলাম বাসার কাছে। বিজ্ঞানী প্রিন্সিপালের কাছে গিয়ে বললাম, আমার ছেলেকে কোনো হোমওয়ার্ক দেওয়া যাবে না। এটা প্লে-গ্রুপ, ও শুধু খেলবে। মাস কয়েক পরে দেখি ওরে হোমওয়ার্ক দিয়েছে। হাজির হলাম। অবাক প্রিন্সিপাল ক্লাস টিচারকে ডেকে পাঠালেন। ‘কী করবো। বাচ্চার পেরেন্টসরা এসে বলে শুক্র-শনিবার বাচ্চা বাসায় থেকে কী করবে। ওদের হোমওয়ার্ক দেন’। বাধ্য হয়ে প্রিন্সিপাল বলে দিলেন যেন রুবাইকে সেটা দেওয়া না হয়। আমার স্ত্রী তখনই সিদ্ধান্ত নিলো, ঢাকা শহরের স্কুলগুলোর একটা এসেসমেন্ট করবে। প্রায় গোটা পঁচিশেক স্কুলের এসেসমেন্টের পর আমরা গুলশান ৭৫ নং সড়কে একটা স্কুলকে নির্বাচন করে রুবাইকে সেখানে নিয়ে যাই। 

আমার বাসা এলিফেন্ট রোডে। তারপরও আমরা এই সিদ্ধান্ত নিই একটা ভালো স্কুলের জন্য। সেই সময় ওই স্কুলের প্রিন্সিপাল ছিলেন একজন গণিতবিদ, কানাডিয়ান। রুবাইকে নিয়ে যাওয়ার সুবাদে মাঝে মধ্যে ওনার সঙ্গে আলাপ হতো। উইন্টার ভ্যাকেশনের পরে একদিন তিনি আমাকে বললেন, তোমরা অদ্ভুত। আমার প্রশ্নবোধক চেহারা দেখে যা জানালেন সেটা শুনে আমি অবাক হইনি। ‘অনেক অভিভাবক প্রিন্সিপালকে অনুরোধ করছেন যেন উইন্টার ভ্যাকেশনে পর্যাপ্ত হোমওয়ার্ক দেওয়া হয়। তাহলে ছেলেমেয়েরা লাইনে থাকবে। উনি বললেন, আরে এটা তো ভ্যাকেশন। ভ্যাকেশনে পড়তে হবে নাÑ এটা ধরেই তো আমরা কারিকুলাম বানাই। 

আমাদের তো অধিকার নাই ওদের শৈশব নষ্ট করার। সেই স্কুল বারিধারা জে ব্লক হয়ে এখন সাঁতারকুলে নিজস্ব বড় ক্যাম্পাসে স্থানান্তরিত হয়েছে। ওখানে ক্লাস থ্রি পর্যন্ত সেরকম কোনো পরীক্ষা হয় না, পরীক্ষার মতো করে পরীক্ষা মানে এডমিট কার্ড হলো এসব নিয়ে পরীক্ষা শুরু হয় অনেক পরে। আর ভ্যাকেশন হোমওয়ার্ক এখনও দেওয়া হয় না। এগুলো কেন লিখলাম? গত কিছুদিন অনেক পেরেন্টস আমার সঙ্গে আলাপ করেছেন সন্তানের জন্য কোন স্কুল ভালো হবে? একজন সহকর্মী বলেছেন, দরকার হলে বাসা বদলাবেন। দরকার হলে বাসা বদলাবেন এমন অভিভাবকের সংখ্যা নেহায়েত কম নয় মনে হলো। দুইদিন ধরে ভাবছিলাম- আচ্ছা, এখন তো অনেক নেটওয়ার্ক, অনেক উদ্যোগ, অনেক সামাজিক সংগঠন- কেউ কেন এ কাজটা করে না। মানে- সন্তানের প্রথম স্কুল বাছাই করার সময় কী কী ভাবা উচিত? সে যখন স্কুলে যেতে শুরু করবে তখন কীভাবে আপনি তাকে সাপোর্ট দিবেন? কীভাবে আপনি তার মধ্যে অনুসন্ধিতসু দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তুলবেন? কীভাবে আপনি তাকে আপনার মতো হতে বলেও আলাদা করবেন? তারপর মনে পড়লো আরে এসব নিয়ে তো উদ্যামী নারীদের নেটওয়ার্ক সাহসিকার জন্ম। তারাও দেখি এখন উদ্যোক্তা সূর্যের আড়ালে ঢাকা পড়ে গেছে। কে দেবে আশা? কে দেবে ভরসা? ফেসবুক থেকে